Pages
▼
Sunday, December 24, 2017
Wednesday, November 15, 2017
বৃক্ষমাতা ওয়াঙ্গারি নেই, আছে তাঁর কোটি গাছ
কেনিয়ার প্রখ্যাত পরিবেশবিদ
ও নারী আন্দোলনের কর্মী ওয়াঙ্গারি মাথাইয়ের মৃত্যুর খবর ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১ প্রচারিত হওয়ার পর সারা
বিশ্বে শোক নেমে আসে। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৭১ বছর বয়সে এই মৃত্যু ঘটলেও তাঁর
মতো একজন মানুষের জন্য এটা অকালমৃত্যুই বলা যায়। কারণ, তাঁর
এখনো অনেক কাজ করার ছিল। তাঁর কাজের গুরুত্ব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে।
কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান কী করে করা যায়, তা ওয়াঙ্গারি মাথাই করে দেখিয়েছেন। ১৯৭৬ সালে তিনি যখন কেনিয়ার জাতীয় নারী পরিষদে (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন) ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর মাথায় সামাজিকভাবে গাছ লাগানোর চিন্তা এসেছিল। বিদেশে লেখাপড়া করে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী হলেও কেনিয়ার গ্রামেই তাঁর বেড়ে ওঠা, প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকেই তিনি দেখেছেন। মাটির গন্ধ তাঁর কাছ থেকে যায়নি। পড়াশোনাও করেছেন প্রাণিবিদ্যা নিয়ে। অধ্যাপনার পাশাপাশি কেনিয়ার নির্যাতিত নারীদের জন্য কাজ করছিলেন। এই সময় তিনি দেখলেন কৃষকদের ফসল উৎপাদন থেকে বিরত রেখে রপ্তানির জন্য অর্থকরী ফসল চা ও কফি উৎপাদন করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বন উজাড় করে চা-কফির উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। এতে কৃষক খাদ্য উৎপাদন করতে পারছে না। নারীরা এতে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে, গবাদিপশুর খাদ্য নেই, রান্নার জন্য খড়ি নেই, খাওয়ার জন্য পানি নেই। এত ব্যাপক সমস্যার একটি সহজ সমাধান বের করলেন ওয়াঙ্গারি: গাছ লাগানো। গাছ খাদ্য দেবে, গাছ রান্নার খড়ি দেবে; গাছের মাধ্যমেই মিলবে এই বড় সমস্যার সমাধান।
একপর্যায়ে গ্রিন বেল্ট মুভমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে গ্রামীণ নারীদের জীবন-জীবিকার জন্য গাছ লাগানো, পরিষ্কার পানির ব্যবস্থা করা, রান্নার জন্য খড়ির ব্যবস্থা করার মতো সহজ কিন্তু অতি জরুরি কাজটি ওয়াঙ্গারি করেছিলেন। তাঁর এই আন্দোলনের মাধ্যমে কেনিয়াতে সাড়ে চার কোটি গাছ লাগানো হয়, প্রায় নয় লাখ নারী চারার নার্সারি করে, গাছ লাগিয়ে মরুময়তা রুখতে পেরেছিলেন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন। শুধু গ্রামীণ নারীদের মাধ্যমেই নয়, গির্জা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও তাঁর গাছ লাগানোর কাজ ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৮৬ সালে গ্রিন বেল্ট মুভমেন্ট আফ্রিকার অন্যান্য দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তানজানিয়া, উগান্ডা, মালাবি, লেসোথো, ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে প্রভৃতি দেশও গাছ লাগিয়ে মরুময়তা রোধ করার উদ্যোগ নেয়।
আফ্রিকার এই নারীর মৃত্যুর খবর বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের কর্মী বা পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা ছাড়া অন্যরা কতখানি তাঁর বিষয়ে অবগত আছেন, তা বোঝার উপায় নেই। পত্রপত্রিকার খবর দেখলেও একটু হতাশ হতে হয়। বিশ্ববিখ্যাত গায়ক মাইকেল জ্যাকসন কিংবা ক্রিকেট খেলোয়াড় নবাব পতৌদির ব্যাপারে যত জানা যায়, ওয়াঙ্গারি সম্পর্কে ততটা নয়। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০০৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনিই আফ্রিকার প্রথম নোবেলবিজয়ী নারী। এটা গুরুত্বপূর্ণ বটে, কিন্তু তাঁর কাজ এর চেয়েও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। নোবেল পুরস্কারের বেলাতেও কেউ কেউ সমালোচনা করেছিলেন, শুধু গাছ লাগিয়ে কী করে একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন! কোটি কোটি গাছ লাগিয়ে যিনি দেশকে ভয়াবহ খরা ও মরুময়তা থেকে রক্ষা করলেন, তার মূল্যায়ন করতেও অনেকের দ্বিধা ছিল।
ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর কাজ এত ছড়িয়ে গিয়েছিল যে জাতিসংঘ ২০০৬ সালে বিশ্বব্যাপী ১১ বিলিয়ন গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেয়। যাঁরা ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর ব্যস্ততা দেখেছেন, তাঁরা মন্তব্য করতেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিআইপিদের দিয়ে গাছ লাগাতে গিয়ে ওয়াঙ্গারিকে হাঁটু গেড়ে বসে কী করে গাছ লাগাতে হয়, তা দেখাতে হতো। তাই তাঁর হাঁটুতে কাদা লেগেই থাকত।
ওয়াঙ্গারি যেমন গাছ লাগিয়েছেন, তেমনি গাছের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাঁর মতামত ছিল অনেক স্পষ্ট।
তিনি ২০০৪ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরপরই প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, মৃত্যুর পর তাঁকে যেন কাঠের কফিনে সমাহিত করা না হয়। তাঁর মতে, কাঠের কফিন বনের জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে ভিন্নভাবে সমাহিত করা হবে, যদিও সেটা কী হবে, এই লেখা যখন লিখছি, তখনো জানা যায়নি। তাঁর এই বক্তব্যে কেনিয়ার সাবেক স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল আরাপ মোই ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ওয়াঙ্গারিকে তিনি পাগল নারী বলে আখ্যায়িত করতেও ছাড়েননি। কারণ, ওয়াঙ্গারির এই সহজ-সরল গাছ লাগানোর কাজটি দারিদ্র্য, সংঘাত দূর করার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, এমনকি ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কেনিয়ার তৎকালীন সরকার ১৯৯৮ সালে সংরক্ষিত বনে তার রাজনৈতিক মিত্রদের জমি বরাদ্দ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে ওয়াঙ্গারি জমি অধিকারের আন্দোলন শুরু করেন। তিনি সংঘাতপূর্ণ কিছুই করেননি, গাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ করেন, কিন্তু তাঁর প্রতিপক্ষ তীর-ধনুক নিয়ে এবং অস্ত্রসজ্জিত হয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। ওয়াঙ্গারি মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯২ সালে তিনি রাজনৈতিক বন্দী সন্তানের মায়েদের নিয়ে অনশন করলে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। অর্থাৎ, ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর কাজ নিছক পরিবেশবাদী কাজ হয়ে থাকেনি, বরং গণতান্ত্রিক ও শান্তির সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে।
সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য গণতান্ত্রিক সরকার একান্তই জরুরি। কাজেই কেনিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গাছ শুধু পরিবেশের জন্য নয়, গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠল। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও পরিবেশের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে লড়তে হলেও গাছ বড় অনুপ্রেরণা জোগায়। ওয়াঙ্গারি এটা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করতেন। ওয়াঙ্গারি পরিবেশ আন্দোলনের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, তিনি ২০০২ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন এবং ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। এই নির্বাচনে ড্যানিয়েল আরাপ মোইয়ের পতন ঘটে। নতুন প্রেসিডেন্ট কিবেকি তাঁকে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
গাছ লাগিয়ে দেশের এত বড় সমস্যার সমাধান করা যাবে, এমন চিন্তা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হয়েছিল। কিন্তু ওয়াঙ্গারি প্রকৃতির সঙ্গে এতই একাত্ম ছিলেন যে বড় সমস্যা সমাধানের জন্য অতি ক্ষুদ্রকায় পাখি হামিং বার্ডের কাছ থেকেও শিক্ষা নিয়েছিলেন। ওয়াঙ্গারি একটি গল্প বর্ণনা করে নিজের কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতেন এভাবে: ‘বনে আগুন লেগেছে, আর হামিং বার্ড ঠোঁটে পানি নিয়ে এক ফোঁটা করে ঢালছে। তা দেখে বৃহৎ প্রাণী হাতির মন্তব্য, হামিং বার্ড অনর্থক তার শক্তি ক্ষয় করছে। উত্তরে হামিং বার্ড বিনয়ের সঙ্গে বলে, আমার সাধ্যে যা কুলোয়, ততটুকুই আমি করছি।’ ওয়াঙ্গারি বলতেন, ‘আমি হাতি হয়ে বসে বসে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে দেখতে চাই না, আমি হামিং বার্ড হয়ে আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকু করে যাব।’
নারী অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জড়িত হয়েই, নারীদের সমস্যার সমাধান করতে গিয়েই ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর অপূর্ব চিন্তা এবং কাজ আমরা দেখেছি। তিনি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও পরিবেশ রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। তিনি মনোযোগ দিয়েছেন রাজনীতিতে, পাশাপাশি নারীদের রান্নার খড়ি জোগানোর কথা ভোলেননি।
Source :
কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান কী করে করা যায়, তা ওয়াঙ্গারি মাথাই করে দেখিয়েছেন। ১৯৭৬ সালে তিনি যখন কেনিয়ার জাতীয় নারী পরিষদে (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন) ছিলেন, তখন থেকেই তাঁর মাথায় সামাজিকভাবে গাছ লাগানোর চিন্তা এসেছিল। বিদেশে লেখাপড়া করে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী হলেও কেনিয়ার গ্রামেই তাঁর বেড়ে ওঠা, প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকেই তিনি দেখেছেন। মাটির গন্ধ তাঁর কাছ থেকে যায়নি। পড়াশোনাও করেছেন প্রাণিবিদ্যা নিয়ে। অধ্যাপনার পাশাপাশি কেনিয়ার নির্যাতিত নারীদের জন্য কাজ করছিলেন। এই সময় তিনি দেখলেন কৃষকদের ফসল উৎপাদন থেকে বিরত রেখে রপ্তানির জন্য অর্থকরী ফসল চা ও কফি উৎপাদন করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বন উজাড় করে চা-কফির উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। এতে কৃষক খাদ্য উৎপাদন করতে পারছে না। নারীরা এতে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে, গবাদিপশুর খাদ্য নেই, রান্নার জন্য খড়ি নেই, খাওয়ার জন্য পানি নেই। এত ব্যাপক সমস্যার একটি সহজ সমাধান বের করলেন ওয়াঙ্গারি: গাছ লাগানো। গাছ খাদ্য দেবে, গাছ রান্নার খড়ি দেবে; গাছের মাধ্যমেই মিলবে এই বড় সমস্যার সমাধান।
একপর্যায়ে গ্রিন বেল্ট মুভমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে গ্রামীণ নারীদের জীবন-জীবিকার জন্য গাছ লাগানো, পরিষ্কার পানির ব্যবস্থা করা, রান্নার জন্য খড়ির ব্যবস্থা করার মতো সহজ কিন্তু অতি জরুরি কাজটি ওয়াঙ্গারি করেছিলেন। তাঁর এই আন্দোলনের মাধ্যমে কেনিয়াতে সাড়ে চার কোটি গাছ লাগানো হয়, প্রায় নয় লাখ নারী চারার নার্সারি করে, গাছ লাগিয়ে মরুময়তা রুখতে পেরেছিলেন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন। শুধু গ্রামীণ নারীদের মাধ্যমেই নয়, গির্জা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও তাঁর গাছ লাগানোর কাজ ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৮৬ সালে গ্রিন বেল্ট মুভমেন্ট আফ্রিকার অন্যান্য দেশের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তানজানিয়া, উগান্ডা, মালাবি, লেসোথো, ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে প্রভৃতি দেশও গাছ লাগিয়ে মরুময়তা রোধ করার উদ্যোগ নেয়।
আফ্রিকার এই নারীর মৃত্যুর খবর বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের কর্মী বা পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা ছাড়া অন্যরা কতখানি তাঁর বিষয়ে অবগত আছেন, তা বোঝার উপায় নেই। পত্রপত্রিকার খবর দেখলেও একটু হতাশ হতে হয়। বিশ্ববিখ্যাত গায়ক মাইকেল জ্যাকসন কিংবা ক্রিকেট খেলোয়াড় নবাব পতৌদির ব্যাপারে যত জানা যায়, ওয়াঙ্গারি সম্পর্কে ততটা নয়। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০০৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনিই আফ্রিকার প্রথম নোবেলবিজয়ী নারী। এটা গুরুত্বপূর্ণ বটে, কিন্তু তাঁর কাজ এর চেয়েও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। নোবেল পুরস্কারের বেলাতেও কেউ কেউ সমালোচনা করেছিলেন, শুধু গাছ লাগিয়ে কী করে একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে পারেন! কোটি কোটি গাছ লাগিয়ে যিনি দেশকে ভয়াবহ খরা ও মরুময়তা থেকে রক্ষা করলেন, তার মূল্যায়ন করতেও অনেকের দ্বিধা ছিল।
ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর কাজ এত ছড়িয়ে গিয়েছিল যে জাতিসংঘ ২০০৬ সালে বিশ্বব্যাপী ১১ বিলিয়ন গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেয়। যাঁরা ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর ব্যস্ততা দেখেছেন, তাঁরা মন্তব্য করতেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভিআইপিদের দিয়ে গাছ লাগাতে গিয়ে ওয়াঙ্গারিকে হাঁটু গেড়ে বসে কী করে গাছ লাগাতে হয়, তা দেখাতে হতো। তাই তাঁর হাঁটুতে কাদা লেগেই থাকত।
ওয়াঙ্গারি যেমন গাছ লাগিয়েছেন, তেমনি গাছের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তাঁর মতামত ছিল অনেক স্পষ্ট।
তিনি ২০০৪ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরপরই প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, মৃত্যুর পর তাঁকে যেন কাঠের কফিনে সমাহিত করা না হয়। তাঁর মতে, কাঠের কফিন বনের জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে ভিন্নভাবে সমাহিত করা হবে, যদিও সেটা কী হবে, এই লেখা যখন লিখছি, তখনো জানা যায়নি। তাঁর এই বক্তব্যে কেনিয়ার সাবেক স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল আরাপ মোই ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ওয়াঙ্গারিকে তিনি পাগল নারী বলে আখ্যায়িত করতেও ছাড়েননি। কারণ, ওয়াঙ্গারির এই সহজ-সরল গাছ লাগানোর কাজটি দারিদ্র্য, সংঘাত দূর করার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, এমনকি ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কেনিয়ার তৎকালীন সরকার ১৯৯৮ সালে সংরক্ষিত বনে তার রাজনৈতিক মিত্রদের জমি বরাদ্দ দেওয়ার উদ্যোগ নিলে ওয়াঙ্গারি জমি অধিকারের আন্দোলন শুরু করেন। তিনি সংঘাতপূর্ণ কিছুই করেননি, গাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ করেন, কিন্তু তাঁর প্রতিপক্ষ তীর-ধনুক নিয়ে এবং অস্ত্রসজ্জিত হয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। ওয়াঙ্গারি মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯২ সালে তিনি রাজনৈতিক বন্দী সন্তানের মায়েদের নিয়ে অনশন করলে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। অর্থাৎ, ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর কাজ নিছক পরিবেশবাদী কাজ হয়ে থাকেনি, বরং গণতান্ত্রিক ও শান্তির সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে।
সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য গণতান্ত্রিক সরকার একান্তই জরুরি। কাজেই কেনিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গাছ শুধু পরিবেশের জন্য নয়, গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে উঠল। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও পরিবেশের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে লড়তে হলেও গাছ বড় অনুপ্রেরণা জোগায়। ওয়াঙ্গারি এটা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করতেন। ওয়াঙ্গারি পরিবেশ আন্দোলনের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, তিনি ২০০২ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন এবং ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। এই নির্বাচনে ড্যানিয়েল আরাপ মোইয়ের পতন ঘটে। নতুন প্রেসিডেন্ট কিবেকি তাঁকে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
গাছ লাগিয়ে দেশের এত বড় সমস্যার সমাধান করা যাবে, এমন চিন্তা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হয়েছিল। কিন্তু ওয়াঙ্গারি প্রকৃতির সঙ্গে এতই একাত্ম ছিলেন যে বড় সমস্যা সমাধানের জন্য অতি ক্ষুদ্রকায় পাখি হামিং বার্ডের কাছ থেকেও শিক্ষা নিয়েছিলেন। ওয়াঙ্গারি একটি গল্প বর্ণনা করে নিজের কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতেন এভাবে: ‘বনে আগুন লেগেছে, আর হামিং বার্ড ঠোঁটে পানি নিয়ে এক ফোঁটা করে ঢালছে। তা দেখে বৃহৎ প্রাণী হাতির মন্তব্য, হামিং বার্ড অনর্থক তার শক্তি ক্ষয় করছে। উত্তরে হামিং বার্ড বিনয়ের সঙ্গে বলে, আমার সাধ্যে যা কুলোয়, ততটুকুই আমি করছি।’ ওয়াঙ্গারি বলতেন, ‘আমি হাতি হয়ে বসে বসে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে দেখতে চাই না, আমি হামিং বার্ড হয়ে আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকু করে যাব।’
নারী অধিকার রক্ষার আন্দোলনে জড়িত হয়েই, নারীদের সমস্যার সমাধান করতে গিয়েই ওয়াঙ্গারির গাছ লাগানোর অপূর্ব চিন্তা এবং কাজ আমরা দেখেছি। তিনি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও পরিবেশ রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। তিনি মনোযোগ দিয়েছেন রাজনীতিতে, পাশাপাশি নারীদের রান্নার খড়ি জোগানোর কথা ভোলেননি।
Source :
Sunday, October 29, 2017
বনায়ন
প্রাকৃতিক উপায়ে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ও তাপমাত্রা কমানোর প্রধান উপায় হলো বনায়ন। আগে কখনও এ বিষয় নিয়ে কেউ মাথা ঘামিয়েছে বলে মনে হয়না। কারণ সবুজ শ্যামলের দেশ বাংলাদেশ। ভয়পুর অক্সিজেন! কিন্তু সারাবিশ্বের বৈশ্বিক পরিবর্তনের পাশাপাশি এবং আমাদের অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে বাংলাদেশের পরিবেশ আজ হুমকির মুখে। আমাদের সবার প্রিয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ এলাকা সুন্দরবনও আজ গুমকির মুখে। এখনই সময় সবার এগিয়ে আসার। প্রতিবাদ করার। সমাধানের উপায় খুজে বের করা। তা না হলে আইলা, সিডর, মহাসেন, রানা প্লাজার মত ঘটনা আরো বাড়তেই থাকবে।
এই পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য বনায়নের কোন বিকল্প নেই। জঙ্গল কেটে কলকারখানা স্থাপন করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করবেন? মহাসেন এসে সব ধ্বংস করে দিয়ে যাবে। তখন আর কোন দিসা খুজে পাওয়া যাবে না। বনায়নের মাধ্যমে সৃষ্ট গাছপালা মানুষের জীবনরক্ষাকারী প্রধান উপাদান অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশকে বিপর্যয়ের হাত হতে রক্ষা করে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ১ হেক্টর বন দৈনিক ৯০০-৯৫০ কেজি কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং ৬০০-৬৫০ কেজি অক্সিজেন সরবরাহ করে বাতাসে কার্বন -ডাই-অক্সাইডের পনিমাণ সাম্যাবস্থায় রাখে। মাত্র কয়েক হেক্টর বনরাজি স্থানীয়ভাবে ৩-৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস করতে পারে। বনায়নের ফলে কি ধরনের উপকার আমরা পেতে পারি এবং নগরায়নের ফলে সৃষ্ট সমস্যা কিভাবে সমাধান হতে পারে তা জেনে নিন।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিয়ন্ত্রণ: নগর এলাকায় জনসংখ্যা এবং শিল্প কারখানা বৃ্দ্ধির ফলে প্রতিদিন বাতাসে সঞ্চিত হচ্ছে ক্ষতিকর গ্যাস ও বিষাক্ত পদার্থ। বনায়নের মাধ্যমে সৃষ্ট বৃক্ষরাজি বাতাসের এই ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস ও বিষাক্ত পদার্থ শোষণ করে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
অক্সিজেন সরবরাহ: বনায়নের মাধ্যমে সৃষ্ট গাছপালা সালোক সংশ্লেষণের মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কে অক্সিজেনে রুপান্তরিত করে এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।
জলবায়ুর তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ: শহর এলাকায় কলকারখানা বেশি থাকে এবং প্রচুর রাসায়নিক পদার্থের বাতাসের সাথে মিশ্রণ ঘটে। এরফলে আবহাওয়া গরম হয়ে যায়। প্রচন্ড গরম অথবা শুষ্ক আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে বনায়নের কোন বিকল্প নেই। একটি বড় গাছ দিনে প্রায় ১০০ গ্যালনের মত পানি প্রস্বেদনের মাধ্যমে চারদিকের বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। এর ফলে সে গাছের চারপাশে তাপের মাত্রা অনেক কমে যায় এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত হতে রক্ষা পায়।
ভূমিক্ষয় রোধ: ভূমি ক্ষয় রোধে বনায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তথ্যের বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রতি বর্গমাইলে ফসলী জমি থেকে মাটির ক্ষয় হয় ২২০০ পাউন্ড, ঘাসে ঢাকা জমি থেকে ১৭০০ পাউন্ড আর বনভূমি থেকে ক্ষয় হয় মাত্র ৩৬০ পাউন্ড।
ঝড়-বন্যা থেকে পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ: বায়ুর নিম্নচাপ জনিত কারণে অন্য স্থানের বাতাস যখন প্রচন্ড বেগে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে যায় তখনই ঝড়ের সৃষ্টি হয়। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে একটি ঘন বৃক্ষ ৩০ মাইল বেগের বাতাসকে ৭৫ ভাগ কমাতে সাহায্য করে এবং তার চারপাশে ২০ ভাগ গতি কমাতে পারে তার উচ্চতার ২০ গুণ দুরুত্ব পর্যন্ত। অন্যদিকে বৃষ্টিপাত এবং বন্যা থেকে রক্ষা পাবার জন্য বনায়ন নদ-নদীর উৎসগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় , ভূমিক্ষয় রোধ করে, এবং বন্যার প্রকোপ হতে রক্ষা করে।
গ্রীন হাউস: পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে গ্রীন হাউস প্রভাব যা বনায়ন গ্রাস পাবার কারণে সৃষ্টি হয়। বনায়নের মাধ্যমে পরিবেশকে গ্রীন হাউসের প্রভাব মুক্ত রাখা যায়।
Tuesday, October 17, 2017
Monday, October 16, 2017
Tuesday, October 10, 2017
কাঁচা মরিচ লাটসাহেব
একটু সচেতন হলেই কাঁচা মরিচ, বেগুন টমেটো যেসব গাছ টবেও হয়,অন্তত লাটসাহেব হতে পারবেনা খুব সহজে।
আমরা কি পারিনা
আমাদের বারান্দায় কিংবা ছাদে কিংবা উঠানে ৩/৪ টি মরিচ গাছ লাগাতে? একটি ছোট পরিবারের জন্য ৩/৪ টি মরিচ গাছের মরিচই যথেষ্ট । মফঃস্বল শহর তো বটেই, ঢাকা
কিংবা অন্যান্য বড় শহরেও এটা করা খুবই সহজ একটি কাজ। যাদের বারান্দায় রোদ আসে তারা
একটু ইচ্ছা করলেই এটা করতে পারেন। স্থানীয় নার্সারি থেকে গাছ কিনে কিংবা ঘরেও পাকা
মরিচ থেকে বীজ থেকে গাছ রোপণ করা সম্ভব। এতে আপনার বাড়তি খরচ টুকু একটু হলেও কমবে,
তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে আপনি গাছ থেকে মরিচ কিংবা বেগুন কিংবা টমেটো
যখন তুলবেন আনন্দটা টাকা দিয়ে মাপা যাবেনা, তাছাড়া ফ্রেশ ও
বিষমুক্ত সবজি খাবেন ,আপনার সন্তান খাবে, এটাও কম কথা নয়।
ইনডোর
প্ল্যান্ট এর ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে, ঘরে কিংবা বারান্দায় ২/৩ টি
গাছ থাকলে আপনি মানসিক আনন্দ যেমন পারেন তেমনি ঘরেও সৌন্দর্য বাড়ার পাশাপাশি ঘরের
বাতাস ও বিশুদ্ধ থাকবে।
Wednesday, October 4, 2017
Thank You All for 200 Likes on Facebook Page
We are happy to inform you that we are a family of 200 members at our Facebook Page,on 4th October 2017.
Mr. IH Imran is our 200th Follower.
Congratulation for all from Tree for Mankind Team.
Please
Join us
Mr. IH Imran is our 200th Follower.
Congratulation for all from Tree for Mankind Team.
Please
Join us
Support us
Stay with us
Plant with us
Stay with us
Plant with us
Tuesday, October 3, 2017
রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপে হাজার হাজার একর বনভূমি সাফ
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লক্ষ-লক্ষ রোহিঙ্গার জন্য সাময়িক আশ্রয় তৈরি করতে উখিয়া এবং টেকনাফের বনভূমির উপর চাপ তৈরি হয়েছে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও এক টুইট বার্তায় সমস্যাটি তুলে ধরেছেন।
বন বিভাগ বলছে, গত একমাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আবাস নির্মাণের জন্য বনভূমির ২০০০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব জায়গায় প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা বনের পাশাপাশি রোপণ করা গাছও ছিল, যেগুলোর বয়স দুই থেকে পাঁচ বছর।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ফরেষ্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড: দানেশ মিয়া কক্সবাজার অঞ্চলের বনভূমি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
তিনি বলছেন, নতুন আসা রোহিঙ্গারা ২৮টি পাহাড়ে তাদের বসতি তৈরি করেছে। পাহাড় কেটে বনভূমিতে বসতি তৈরি করায় প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
"বাংলাদেশে এখন টেকনাফ এরিয়াতে কিছু হাতি রয়ে গেছে। এ হাতিগুলোকে রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা সেখানে হয়েছে। এখন রোহিঙ্গারা আসার পরে সে চেষ্টা কাজে লাগছে বলে আমার মনে হয়না," বলছিলেন অধ্যাপক দানেশ মিয়া।
রোহিঙ্গা বসতি নিয়ে বনভূমির উপর চাপ তৈরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের মনেও নানা চিন্তা রয়েছে।
সরকার বলছে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গোপসাগরের কাছে একটি চরে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
বনভূমির উপর যে চাপ তৈরি হয়েছে সেটিকে 'সাময়িক ক্ষতি' হিসেবে বর্ণনা করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বন বিভাগের কক্সবাজার দক্ষিণের কর্মকর্তা আলী কবির বলছেন, এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের বন বিভাগের বরাদ্দ করা ২০০০ একর জমিতে একত্রে রাখা হবে।
লক্ষ-লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিকে বাংলাদেশ সরকারসহ অনেকেই মানবিক দৃষ্টিতে দেখছে। বন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবকিতার পাশাপাশি বনভূমির কথা ভুলে গেলে চলবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দানেশ মিয়া মনে করেন, পরিবেশ এবং বনভূমির কথা চিন্তা করলে রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে পারলে বনভূমির উপর চাপ কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক মিয়া বলেন, "সবাইকে রান্না করে খেতে হচ্ছে। এক লক্ষ চুলা যদি থাকে, সেই এক লক্ষ চুলার জন্য প্রতিদিন যদি নূন্যতম পাঁচ কেজি জ্বালানি ধরি, তাহলে প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ কেজি কাঠ পুড়ছে। এগুলো কোন না কোনভাবে আমাদের উখিয়া টেকনাফের জঙ্গল থেকে যাচ্ছে।"
বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা গেলে রোহিঙ্গারা জ্বালানি সংগ্রহের জন্য বনে-জঙ্গলে আসতো না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলে উখিয়া ও টেকনাফের জায়গাগুলোতে আবারো বনায়ন করা হবে।
Source : BBC Bangla
বন বিভাগ বলছে, গত একমাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আবাস নির্মাণের জন্য বনভূমির ২০০০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব জায়গায় প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা বনের পাশাপাশি রোপণ করা গাছও ছিল, যেগুলোর বয়স দুই থেকে পাঁচ বছর।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ফরেষ্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড: দানেশ মিয়া কক্সবাজার অঞ্চলের বনভূমি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
তিনি বলছেন, নতুন আসা রোহিঙ্গারা ২৮টি পাহাড়ে তাদের বসতি তৈরি করেছে। পাহাড় কেটে বনভূমিতে বসতি তৈরি করায় প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
"বাংলাদেশে এখন টেকনাফ এরিয়াতে কিছু হাতি রয়ে গেছে। এ হাতিগুলোকে রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা সেখানে হয়েছে। এখন রোহিঙ্গারা আসার পরে সে চেষ্টা কাজে লাগছে বলে আমার মনে হয়না," বলছিলেন অধ্যাপক দানেশ মিয়া।
রোহিঙ্গা বসতি নিয়ে বনভূমির উপর চাপ তৈরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের মনেও নানা চিন্তা রয়েছে।
সরকার বলছে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গোপসাগরের কাছে একটি চরে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
বনভূমির উপর যে চাপ তৈরি হয়েছে সেটিকে 'সাময়িক ক্ষতি' হিসেবে বর্ণনা করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বন বিভাগের কক্সবাজার দক্ষিণের কর্মকর্তা আলী কবির বলছেন, এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের বন বিভাগের বরাদ্দ করা ২০০০ একর জমিতে একত্রে রাখা হবে।
লক্ষ-লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিকে বাংলাদেশ সরকারসহ অনেকেই মানবিক দৃষ্টিতে দেখছে। বন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবকিতার পাশাপাশি বনভূমির কথা ভুলে গেলে চলবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দানেশ মিয়া মনে করেন, পরিবেশ এবং বনভূমির কথা চিন্তা করলে রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে পারলে বনভূমির উপর চাপ কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক মিয়া বলেন, "সবাইকে রান্না করে খেতে হচ্ছে। এক লক্ষ চুলা যদি থাকে, সেই এক লক্ষ চুলার জন্য প্রতিদিন যদি নূন্যতম পাঁচ কেজি জ্বালানি ধরি, তাহলে প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ কেজি কাঠ পুড়ছে। এগুলো কোন না কোনভাবে আমাদের উখিয়া টেকনাফের জঙ্গল থেকে যাচ্ছে।"
বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা গেলে রোহিঙ্গারা জ্বালানি সংগ্রহের জন্য বনে-জঙ্গলে আসতো না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলে উখিয়া ও টেকনাফের জায়গাগুলোতে আবারো বনায়ন করা হবে।
Source : BBC Bangla